সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নানকিং-এর সন্ধি ও তিয়েনসিনের সন্ধির মূল শর্তগুলি আলোচনা করো।

নানকিং-এর সন্ধি: (1) সন্ধি স্বাক্ষর: আফিম যুদ্ধে ব্রিটেন চিনকে হারিয়ে দেয়। পরাজিত চিন যুদ্ধ শেষে বিজয়ী ব্রিটেনের সঙ্গে এক সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় । চিনা কমিশনার চি-ইং (Chi-ying) এবং নব নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্যার হেনরি পট্টিনগার (Sir Henry Pottinger)-এর উদ্যোগে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত হয় নানকিং চুক্তি (২৯ আগষ্ট, ১৮৪২ খ্রি.)। এই সন্ধি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আফিম যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। (2) সন্ধির শর্তাবলি: এই চুক্তির শর্তগুলি হল—[i] চিন গ্রেট ব্রিটেনকে হংকং সমর্পন করবে অর্থাৎ হংকং ইংরেজদের অধীনে আসবে। [ii] চিন সর্বমোট ব্রিটেনকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২১ মিলিয়ন ডলার দেবে। এই ২১ মিলিয়নের মধ্যে ১২ মিলিয়ন ডলার সামরিক খরচ বাবদ, ৬ মিলিয়ন ডলার আফিমের ক্ষতিপূরণ বাবদ এবং ৩ মিলিয়ন ডলার ব্রিটিশ বণিকদের কাছে হং বণিকদের ঋণ পরিশোধ বাবদ। [iii] ক্যান্টন, অ্যাময়, ফুচাও, নিংপো এবং সাংহাই—এই পাঁচটি বন্দর ইংরেজ বণিকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। ওই বন্দরগুলিতে ব্রিটিশ কনসাল, ব্রিটিশ বণিকগণ এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতে পারবে। [iv] খুব কম সময়ের মধ্যে এক নির্দিষ্ট পণ্যশুল্কের...

ইতিহাস রচনায় ঐতিহাসিকের ভূমিকা লেখো।

অথবা,পেশাদারি শাখা (Professional Branch) হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো।  ইতিহাস রচনায় ঐতিহাসিকের ভূমিকা : সূচনা: বলা হয় ইতিহাস হল মানব জাতির অতীত কর্মকাণ্ডের কালানুক্রমিক ও ধারাবাহিক লিখিত বিবরণ। ইতিহাসের গুরুত্ব [1] অতীতের ধারণাদানে: আর. জি. কলিংউড তাঁর 'দ্য আইডিয়া অব হিস্ট্রি' গ্রন্থে লিখেছেন ঐতিহাসিকের মস্তিষ্ক থেকে অতীতের যে ছবি বেরিয়ে আসে তা হল ইতিহাস। পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব, মানুষের সভ্য দশা, বন্য দশা, সভ্যতার উদয় ও অগ্রগতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ধর্মনীতি সমস্ত কিছুরই ধারণা দেয় ইতিহাস। জে. বি. বিউরি এবং লিওপোল্ড ভন র‍্যাঙ্কের মতো ঐতিহাসিকগণ তাই বলেছেন— ‘ঐতিহাসিকের কাজ হল শুধুমাত্র অতীত পুনর্গঠন করা এবং অতীত ঘটনাগুলিকে পরিবর্তিত বা বিকৃত না করে উপস্থাপিত করা।’ [2] জ্ঞানের সুষম বিকাশে : ইতিহাসে আমরা খুঁজে পাই পুরাতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ, দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, ভৌগোলিক অবস্থান, সাহিত্যিক বিবর্তন, ভাষার বৈচিত্র্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের তত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞানের মানবক্রিয়া এবং অর্থনীতির নানারূপ। এ ছাড়াও মানব বিবর্তন, সভ্যতার উত্থানপতন, সাম্র...

লক্ষ্ণৌ চুক্তির শর্তাবলি উল্লেখ করো। এই চুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

লক্ষ্ণৌ চুক্তি: জাতীয় কংগ্রেসের লক্ষ্ণৌ অধিবেশন চলাকালীন চরমপন্থী নেতা বালগঙ্গাধর তিলকের নেতৃত্বে কংগ্রেস ও মহম্মদ আলি জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার নাম ‘লাক্ষ্ণৌ চুক্তি’। কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মধ্যেকার যাবতী বিভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় (১৯১৬ খ্রি.) । ঐতিহাসিক বিধানচন্দ্র তার 'Modern India' গ্রন্থে লিখেছেন- হিন্দু মুসলিম ঐক্যের ক্ষেত্রে লক্ষৌ চুক্তি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপরূপে চিহ্নিত। লক্ষ্ণৌ চুক্তির শর্তাবলি: লক্ষ্ণৌ চুক্তির মাধ্যমে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ মিলিতভাবে সরকারের কাছে কিছু দাবি পেশ করে। এই সমস্ত দাবিগুলিতে বিকেন্দ্রীকরণ, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে নির্বাচন ও ভারতীয়করণের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়। চুক্তির অন্যতম কিছু শর্ত ছিল— (a) কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন হবে। যার মধ্যে চার- পঞ্চমাংশ হবে নির্বাচিত সদস্য এবং এক-পঞ্চমাংশ হবে মনোনীত সদস্য। যতটা সম্ভব ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সদস্য নির্বাচিত হবে। নির্বাচিত সদস্যের এক-তৃতীয়াংশ হবে মুসলিম সদস্য, যাঁরা মুসল...