সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

গৌরবময় বিপ্লব কি বৈপ্লবিক ঘটনা ছিল?

গৌরবময় বিপ্লবঃ       রজবংশের শেষ রাজ দ্বিতীয় জেমসের সিংহাসন ত্যাগ এবং তৃতীয় উইলিয়াম ও রানী মেরীর ইংল্যান্ডের সিংহাসন আরোহণের ঘটনা ১৬৮৮ খ্রিস্টান্সের রক্তহীন বিপ্লব বা গৌরবময় বিপ্লব নামে পরিচিত। স্টুয়ার্ট রাজবংশের সিংহাসন লাভের এর পর থেকে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে যে রাজনৈতিক জটিল প্রশ্ন দেখা দেয় এই বিপ্লবের ফলে তার অবসান ঘটে। রাজমুকুট ও পার্লামেন্টের সংঘর্ষে শেষ পর্যন্ত পার্লিয়ামেন্ট জয়লাভ করে। প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে বিচার করলে ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দের ইংল্যান্ডের বিপ্লবের সঙ্গে তুলনীয় কোন বিপ্লব ইয়োরোপের ইতিহাস আর কোথাও ঘটেনি। এই বিপ্লব ছিল রক্তপাতহীন এবং এর লক্ষাও ছিল প্রচণ্ড সংরক্ষণশীল। হুইগ ও টোরি নেতৃবৃন্দ অর্থাৎ যারা এই বিপ্লবের পটভূমিকা রচনা করেন এবং এই বিপ্লবকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাঁরা কেউ মৌলিক সংস্কার সাধনের মাধ্যমে বা রাজনৈতিক মতবাদ বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে ইংল্যান্ডের শাসনব্যবস্থার কোন পরিবর্তন করতে আগ্রহী ছিলেন না। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল খুবই সীমিত। প্রকৃতপক্ষে রাজা দ্বিতীয় জেমস সংবিধানের কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে ধবংস করতে চেয়ে...

পাকিস্তানের আইন ও শাসনকাঠামো সম্পর্কে আলোচনা করো।

সূচনা: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ভারতবর্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের জাতির জনক মহম্মদ আলি জিন্নার নেতৃত্বে স্বাধীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে ওঠে। পাকিস্তানের আইন ও শাসনকাঠামো: [1] কেন্দ্রীয় আইনসভা : স্বাধীন পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় আইনসভায় দুটি কক্ষ রয়েছে— একটি উচ্চকক্ষ এবং অন্যটি নিম্নকক্ষ।  [i] উচ্চকক্ষের নাম হল সিনেট। সিনেটের আসনসংখ্যা ১০০। এর মধ্যে ৮৮ জন চারটি প্রদেশ থেকে এবং অবশিষ্ট ১২ জন ইসলামাবাদ ও উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হন। সিনেটে ২০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়।  [ii] নিম্নকক্ষের নাম হল জাতীয় সভা। জাতীয় সভার আসনসংখ্যা ৩৪২। এর মধ্যে মহিলারা অন্তত ৬০টি আসনে এবং অমুসলিমরা ১০টি আসনে নির্বাচিত হতে পারে। [2] রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি হলেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান।  [i] আইনসভার দুটি কক্ষের সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি নির্বাচক সংস্থা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করেন।  [ii] রাষ্ট্রপতি হলেন পাকিস্তানের নিয়মতান্ত্রিক শাসক। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে...

ইলতুৎমিস থেকে আলাউদ্দিন খিলজী পর্যন্ত মুসলিম নৃপতিতত্ত্বের বিবর্তন আলোচনা কর।

অথবা, সুলতান শাহীর আমলে রাজতন্ত্রের বিবর্তন সম্বন্ধে লেখ। ইলতুৎমিস থেকে আলাউদ্দিন খিলজী পর্যন্ত মুসলিম নৃপতিতত্ত্বের বিবর্তন:       মহম্মদ ঘুরী ও তাঁর সেনাপতিরা ভারতে পাঞ্জাব থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত রাজ্যবিস্তার করেন। তারপর প্রায় একশো বছর সুলতানী সাম্রাজ্যকে বহু ঝড়-ঝাপটার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল। অসংখ্য সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য সুলতানদের বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হত।     ইলতুৎমিস সিংহাসনে আরোহণ করেই বুঝতে পারেন যে সুলতান পদের মর্যাদা না বাড়াতে পারলে তার পক্ষে অভিজাতদের নিয়ন্ত্রণে রাখা অসম্ভব। এজন্য তিনি স্বৈরতান্ত্রিক রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। এটা কার্যকর করতেও তিনি সচেষ্ট হন। সর্বপ্রথম তিনিই বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় করেন। খলিফার সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক স্থাপন করেন। যার ফলশ্রুতি হিসেবে খলিফার নিকট থেকে তিনি ‘সুলতান-ই-আজম’ উপাধি লাভ করেন। খলিফার এই স্বীকৃতি তাঁকে অনান্য আমীর ওমরাহদের চেয়ে অনেক ওপরে স্থাপন করে এবং সুলতানের পদমর্যাদাও বৃদ্ধি পায়।        ইলতুৎমিসের মৃত্যুর পর সুলতানের পদমর্যাদা ক্ষিণ হতে শুরু করে। রাজতন্ত্র ও অভিজাতদে...

একজন ঐতিহাসিক হিসেবে আবদুল কাদির বদায়ুনির মূল্যায়ন করো ।

আবদুল কাদির বদায়ুনি:             আকবর তথা মুঘল যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিকদের মধ্যে আবদুল কাদির বদায়ুনির নাম উল্লেখযোগ্য। ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে ফৈজাবাদের বদায়ুনে তাঁর জন্ম হয়। বদায়ুনির পিতা শেখ মুলুক শাহ ছিলেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। শৈশবে বদায়ুনি সম্ভালের শেখ হাতিমের কাছে শিক্ষালাভ করেন। ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে পিতার মৃত্যুর পর বদায়ুনি আবুল ফজলের পিতা শেখ মুবারকের কাছে শিক্ষালাভ করেন। শৈশবেই ইতিহাসের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ জন্মেছিল। জীবনের অনেকটা সময় ইতিহাস পড়তে এবং লিখতে কাটিয়ে দিতেন। ১৫৭৪-৭৫ খ্রিস্টাব্দে আগ্রায় সর্বপ্রথম তিনি সম্রাট আকবরের দর্শন পান। এরপর আকবর তাঁর পান্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে দরবারের ইমামের পদে বসান। ইতিহাসে বদায়ুনি আকবরের উদার ধর্মনীতির একজন কট্টর সমালোচক হিসাবে গণ্য হলেও মনে রাখতে হবে যে, আকবরের উৎসাহেই বদায়ুনি মহাভারতের ফার্সী অনুবাদ করেছিলেন। তবে তিনি গোঁড়া হলেও আবুল ফজলের মতোই উলেমাদের আত্মম্ভরিতা, ধর্মান্ধতা ও খারাপ ব্যবহার পছন্দ করতেন না। তিনি উলেমাদের বহু তর্কযুদ্ধে পরাজিত করেন। বদায়ুনি নিজে গোঁড়া ছিলেন কিন্তু সহানুভূতিহীন, হৃদয়হীন...

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের তাৎপর্য আলোচনা করো।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের গুরুত্ব/তাৎপর্য             ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে গণ্য হয়। ১৫২৫ খ্রিস্টাব্দে বাবর সসৈন্যে কাবুল থেকে যাত্রা করে পাঞ্জাবে প্রবেশ করেন। যুদ্ধে দৌলত খাঁ পরাজিত হন। এর পর বাবর দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে সুলতান ইব্রাহিম লোদি তাঁকে পানিপথের প্রান্তরে বাধা  দেন।  উভয়ের  মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ইব্রাহিম নিহত হন এবং বাবর যুদ্ধে জয়লাভ করেন। ভারতের ইতিহাসে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ । ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দের এই যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ভারতের আদি মধ্যযুগের অবসান ঘটে এবং আধুনিক কালের আবির্ভাবের পূর্ব সূচনা ঘটে ।  প্রথমতঃ ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রান্তরে দিল্লির শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদির সঙ্গে মুঘল বংশীয় কাবুলের অধিকর্তা বাবরের যুদ্ধ হয়। এই‌ যুদ্ধের ফলে সুলতান ইব্রাহিম লোদি পরাজিত এবং নিহত হন। সুলতানের মৃত্যুর সাথে সাথে দিল্লির সুলতানি শাসনের অবসান ঘটে। প্রায় ৩২০ বছরের স্থায়ী সুলতানি শাসনের অবসান ঘটার ফলে ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃত...