সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুন, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধ: ফলাফলের তুলনামূলক বিশ্লেষণ ।

পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধের ফলাফলের তুলনামূলক আলোচনা :        পলাশির যুদ্ধে ১৭৫৭, ২৩ জুন ভাগীরথীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌল্লার সাথে ক্লাইভের নেতৃত্ব ইংরেজদের যে লড়াই হয়েছিল তা ভারত ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত।    এই যুদ্ধে সিরাজের পরাজয়ের ফলে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য প্রায় ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়। তাই এই যুদ্ধের ফলাফল ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এই পলাশির যুদ্ধের ফলাফল বা গুরত্বগুলি হল-      পলাশির যুদ্ধের হতাহতের সংখ্যা ও ব্যাপকতার দিক থেকে এটি ছিল একটি খণ্ডযুদ্ধ মাত্র। এই যুদ্ধে নবাবের পক্ষে ৫০০ জন এবং ইংরেজদের পক্ষে মাত্র ২২জন সেনার মৃত্যু হয়। পলাশির যুদ্ধের হতাহতের সংখ্যা ও ব্যাগপকতার দিক থেকে এটি ছিল একটি খণ্ডযুদ্ধ মাত্র। মীরজাফর ব্রিটিশ সাথে মিলে নবাবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।        এই যুদ্ধে হেরে ভারতের পূর্বদিকে সমৃদ্ধ অঞ্চল বিদেশিদের অধীনে গেল। ইংরেজরা ভারতে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে পড়ে। তারা নৃপতি বানানোর চেষ্টায় উদ্যত হয়। নিজেদের অনুগত মানুষকে বাংলার সিংহাসনে বসিয়ে বাংলা থেকে ব...

১৫২৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মুঘল-আফগান দ্বন্দ্বের বিবরণ দাও।

মুঘল-আফগান দ্বন্দ্ব:      ভারতে মুঘল শক্তির উত্থান ও বিকাশের সঙ্গে মুঘল আফগানি দ্বন্দ্বের সমান্তরাল অবস্থান দেখা যায়। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মুঘল আফগান দ্বন্দ্ব চলতে থাকে।      খানুয়ার যুদ্ধ: ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহের সঙ্গে বাবরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। যুদ্ধে রানা সংগ্রাম সিংহ পরাজিত হন। এই যুদ্ধে রাজপুতদের সঙ্গে আফগানরা সহযোগিতা করেনি। রাজপুতদের সঙ্গে সঙ্গে আফগানরাও যদি মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করত তাহলে হয়ত ভারতের ইতিহাসের গতি অন্য পথে প্রবাহিত হতে পারত।     ঘর্ঘরার যুদ্ধ (১৫২৯ খ্রিস্টাব্দ): বাবর আফগানদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হয়ে বিহারের সীমান্তে পৌঁছান। পূর্ব ভারতে মুঘল আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য জৌনপুরের শাসনকর্তা মামুদ লোদি বিহারের আফগান নেতা শেরশাহ, এবং বাংলার সুলতান মুঘল শক্তির বিরুদ্ধে সম্মিলিত ঐক্যশক্তি জোট গঠন করেন। বাবর নুসরৎশাহের কাছে দূত পাঠিয়ে তাঁর বশ্যতা স্বীকার করতে বলেন। এর পর মামুদ লোদি, ও শেরশাহ মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। বাবর এলাহাবাদ, বারাণসী দখল করে বিহারের আরো জেলা অধিকার করার জন্...

১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দ ও কনস্ট্যান্টিনোপোলের পতনের গুরুত্ব।

কনস্ট্যান্টিনোপোলের পতনের গুরুত্ব:                খ্রিস্টপূর্ব ৬৫৭ অব্দে গ্রিক উপনিবেশ হিসেবে কনস্ট্যান্টিনোপল নগরীর পত্তন হয়েছিল। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে (৩৩০ খ্রিস্টাব্দ) এটি পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সাতটি ছোটো ছোটো পাহাড়বেষ্টিত এবং চোদ্দটি জেলায় বিভক্ত এই শহরকে 'নতুন রোম'ও বলা হত। প্রথমে এটি ছিল রোম সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী। পরে ৩৯৫ খ্রিস্টাব্দে এটি পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে গণ্য হয়। ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে বর্বর আক্রমণের ফলে পশ্চিম রোম সাম্রাজ্যের পতন হলেও, পূর্ব রোমকে কেন্দ্র করে রোমান সাম্রাজ্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য প্রবহমান ছিল। পূর্ব রোম সাম্রাজ্য বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য নামেও পরিচিত ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের অর্থনীতির ভিত্তি ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যকেও সচল রাখার কাজে পূর্ব রোম সফল ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে কনস্ট্যান্টিনোপল অটোমান তুর্কিদের দখলে চলে যায়। এটি অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী রূপে গণ্য হয়। এর নতুন নাম হয় 'ইস্তাম্বুল'। ইউরোপের ইতিহাসে কনস্ট্যান্টিনোপলের উত্থান যেমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, তেমনি এই সাম্র...

আদিনা মসজিদ কে তৈরি করেন? এর স্থাপত্যগত বৈশিষ্ট্যগুলো কি ছিল?

আদিনা মসজিদ এর স্থাপত্যগত বৈশিষ্ট্য:       আদিনা মসজিদ – ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় সুলতান সিকন্দর শাহ ১৩৬৯ বা ১৩৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই মসজিদটির নির্মাণ কার্য শেষ করেন। মালদহ জেলার পান্ডুয়ার এক মাইল উত্তরে এই মসজিদের অবস্থান। মুসলিম যুগের বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্পের প্রথম নিদর্শন আদিনা মসজিদ পূর্বভারতের বৃহত্তম এবং ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ। এই মসজিদ দৈর্ঘে ৫০৭ ফুট ৬ ইঞ্চি, এবং প্রস্থে ২৮৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। চারদিকের আচ্ছাদিত পথ বাদেও এই মসজিদের প্রাঙ্গণের দৈর্ঘ্য ৩৯৭ ফুট এবং প্রস্থ ১৫২ ফুট। মসজিদের পিছনের প্রাচীরের নিকট মিহবার অর্থাৎ প্রার্থনার কুলুঙ্গি এবং উত্তর দিকে মিমবার বা প্রাচীর বেদী অবস্থিত। প্রাচীর বেদীর কিছু দূরে আটফুট উঁচুতে বাদশাহ-কা-তক্ত- সম্ভবত রাজ-পরিবারের সদস্যদের জন্য এই স্থানটি নির্দিষ্ট ছিল। বর্তমানে মসজিদটি অনেকাংশই প্রাকৃতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ধবংসাবশেষের মধ্যে হিন্দু মন্দিরের উপকরণ দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি, পদ্মফুল এবং অন্যান্য হিন্দু স্থাপত্যের নিদর্শন দেখে অনেকেই মনে করেন যে সম্ভবত কোন হিন্দুমন্দির ধবংস করেই এই বিশালাকৃতির মস...