সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দ ও কনস্ট্যান্টিনোপোলের পতনের গুরুত্ব।

কনস্ট্যান্টিনোপোলের পতনের গুরুত্ব:

           

   খ্রিস্টপূর্ব ৬৫৭ অব্দে গ্রিক উপনিবেশ হিসেবে কনস্ট্যান্টিনোপল নগরীর পত্তন হয়েছিল। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে (৩৩০ খ্রিস্টাব্দ) এটি পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সাতটি ছোটো ছোটো পাহাড়বেষ্টিত এবং চোদ্দটি জেলায় বিভক্ত এই শহরকে 'নতুন রোম'ও বলা হত। প্রথমে এটি ছিল রোম সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী। পরে ৩৯৫ খ্রিস্টাব্দে এটি পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে গণ্য হয়। ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে বর্বর আক্রমণের ফলে পশ্চিম রোম সাম্রাজ্যের পতন হলেও, পূর্ব রোমকে কেন্দ্র করে রোমান সাম্রাজ্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য প্রবহমান ছিল। পূর্ব রোম সাম্রাজ্য বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য নামেও পরিচিত ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের অর্থনীতির ভিত্তি ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যকেও সচল রাখার কাজে পূর্ব রোম সফল ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে কনস্ট্যান্টিনোপল অটোমান তুর্কিদের দখলে চলে যায়। এটি অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী রূপে গণ্য হয়। এর নতুন নাম হয় 'ইস্তাম্বুল'। ইউরোপের ইতিহাসে কনস্ট্যান্টিনোপলের উত্থান যেমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, তেমনি এই সাম্রাজ্যের পতনও সুদূরপ্রসারী ফলে সমৃদ্ধ।

         অটোমান তুর্কি জাতি ত্রয়োদশ শতকে ইউরোপে আধিপত্য স্থাপন করে। তুর্কি সমরনায়ক ওসমান সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ১৪১৩ খ্রিস্টাব্দে সুলতান প্রথম মহম্মদের আমল থেকেই তুর্কিরা কনস্ট্যান্টিনোপলের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে। দ্বিতীয় মহম্মদ সুলতান পদে বসেই কনস্ট্যান্টিনোপল দখল করে নিজের সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় ও সুরক্ষিত করতে সচেষ্ট হন। প্রথমে তিনি অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে বাইজান্টাইন রাজধানীকে নিঃসঙ্গ করে দেন। ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে প্রায় চুয়ান্ন দিন (৬ এপ্রিল-২৯ মে) জল-স্থল উভয়দিকে অবরুদ্ধ থাকার পর কনস্ট্যান্টিনোপলের ওপর তুর্কি আধিপত্য স্থাপিত হয়।

          কনস্ট্যান্টিনোপলের পতনের কালকে মধ্যযুগের অবসান ও আধুনিক ইউরোপের আবির্ভাবের সীমান্তরেখা বলে ধরে নেওয়া হয়। এত জনবহুল একটি শহরের পতন এবং সেখান থেকে ভীতসন্ত্রস্ত মানুষদের ইতালি ও ইউরোপের নানা-শহরে আশ্রয় গ্রহণ ইউরোপের মনোজগতে এক গভীর আলোড়নের জন্ম দেয়।

     কনস্ট্যান্টিনোপলের পতনের পর ইউরোপীয় পণ্ডিতরা বিশেষ করে গ্রিক বুদ্ধিজীবিরা ইতালিতে চলে যান। সঙ্গে নিয়ে যান তাঁদের মহার্ঘ জ্ঞানভাণ্ডার, পুঁজি, পুস্তিকা সব। ফলে ইতালিতে প্রবলভাবে ঐতিহ্যের চর্চা শুরু হয়। এর থেকে নবজাগরণ নতুন মাত্রা ও গতিবেগ সঞ্চার করে। 

          কনস্ট্যান্টিনোপল তুর্কিদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলে ইউরোপের অর্থনীতিতে, বিশেষত বাণিজ্যে পরিবর্তন অনিবার্য হয়। এতকাল ভূমধ্যসাগরের ওপর রোমান সাম্রাজ্যের কর্তৃত্ব বজায় ছিল। এখন কনস্ট্যান্টিনোপলের পতনের পর তুর্কিরা ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে প্রচলিত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপের পণ্যবাহী জাহাজগুলি তুর্কিদের আক্রমণের ফলে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। ফলে ইউরোপীয় বণিকরা এশিয়া মহাদেশে পৌঁছানোর জন্য বিকল্প সমুদ্রপথ অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এইভাবে সামুদ্রিক অভিযান গতি পায়। এইভাবে এশিয়া মহাদেশে যাওয়ার নতুন পথ এবং আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কৃত হয়। 

        নতুন দেশ ও মহাদেশ আবিষ্কার এবং যোগাযোগের সূত্রে মানুষের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আসে। ধর্ম, সমাজ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জাগে। গোঁড়ামি ও রক্ষণশীলতার অবসানের লক্ষ্যে শুরু হয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন।

   কনস্ট্যান্টিনোপলের পতনের ফলে ইউরোপে রাষ্ট্রচিন্তার ক্ষেত্রে এক মৌলিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। এতকাল ইউরোপের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের মোহময়ী ধারণা। রাষ্ট্রের প্রকৃতি, রাজার কর্তব্য ও ক্ষমতার স্বরূপ, আইনের সীমারেখা ইত্যাদি সব বিষয়েই রোমান ঐতিহ্য নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নিয়েছিল। অর্থাৎ ইউরোপের রাজনৈতিক দর্শন হয়ে উঠেছিল রোমান সাম্রাজ্য এককেন্দ্রিকতা। এখন রোমান সাম্রাজ্যের শেষ প্রদীপ পূর্ব রোমের পতনের ফলে ইউরোপে নতুন করে রাষ্ট্র ভাবনার সুযোগ আসে। গড়ে উঠতে শুরু করে স্বতন্ত্র্য জাতি রাষ্ট্রের ধারণা।

          এইভাবে কনস্ট্যান্টিনোপলের পতন এক দীর্ঘ ঐতিহ্যের অবসান ঘটায় এবং ইউরোপে এক নতুন সূর্যোদয়ের সম্ভাবনা গড়ে দেয়। মধ্যযুগের সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতির স্মৃতি মনে রেখে ইউরোপ আধুনিক যুগে উত্তরণের পথ খুঁজে পায়।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব আলোচনা করো।

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব: ভূমিকা: আধুনিক বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির উপনিবেশ প্রসারের কৌশল ‘নয়া উপনিবেশবাদ’ ও ‘নয়া সাম্রাজ্যবাদ’ নামে পরিচিত। উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে জে. এ. হবসন এবং ভি. আই. লেনিন সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ সম্পর্কে তাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। হবসনের ব্যাখ্যা:  ব্রিটিশ অর্তনীতিবিদ জে. এ. হবসন তাঁর ‘সাম্রাজ্যবাদঃ একটি সমীক্ষা’ নামক গ্রন্থে সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতাবাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর ব্যাখ্যার প্রধান বিষয়গুলি হল—  [1] অর্থনৈতিক মুনাফা লাভ: হবসনের মতে, সাম্রাজ্যবাদের পিছনে কোনো মহৎ, বা উচ্চতর লক্ষ্য নয়, অর্থনৈতিক মুনাফাই ছিল নয়া উপনিবেশকারীদের প্রধানতম উদ্দেশ্য। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় সমাজে ধনসম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্যের ফলে পুঁজিপতিদের হাতে যে ‘মূলধনের পাহাড়' সৃষ্টি হয়, সেই মূলধন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে তারা মুনাফা লাভের পরিকল্পনা করে। [2] পুঁজিপতিদের চাপ: হবসন মনে করেন যে, নতুন ক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ করা...

অবশিল্পায়ন কি ? ঔপনিবেশিক ভারতে অবশিল্পায়নের কারণ ও ফলাফল লেখো ।

অবশিল্পায়নঃ        অবশিল্পায়ন বলতে বোঝায় শিল্পায়নের বিপরীত বা শিল্পের অধোগতি। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের চিরাচরিত ও ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্প-কুটিরশিল্পের ধ্বংস সাধনই মূলত অবশিল্পায়ন। সব্যসাচী ভট্টাচার্যের মতে যদি দেশের মানুষ শিল্প-কর্ম ছেড়ে চাষ-আবাদে জীবিকা অর্জন শুরু করে অথবা জাতীয় কৃষিজ ও অংশ বাড়তে থাকে এবং শিল্পজ অংশ কমতে থাকে তাকে অব-অবশিল্পায় বলে। অবশিল্পায়নের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের অবশিল্পায়ন সম্পর্কে প্রথম পর্বে দাদাভাই নাও রোজি, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনীপাম দত্ত জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনী পামদত্ত, গ্যাডগিল, বি.ডি. বসু, নরেন্দ্রকৃয় সিংহ, বিপান চন্দ্র, অমিয় বাগচি প্রমুখ ঐতিহাসিক আলোচনা করেছেন। অব-শিল্পায়নের কারণঃ (১) কাঁচামালের রপ্তানি: ভারতীয় শিল্পের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে ইংল্যান্ডে কাঁচামাল রপ্তানি শুরু হয়। ভারত ইংল্যান্ডের কলকারখানার খোলা বাজার ও কাঁচামাল সরবরাহের উৎসে পরিণত হয়। ভারত থেকে তুলো, নীল, কফি, চা, রেশম প্রভৃতি ইং...

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এই যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কী ছিল ?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: সূচনা: ১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে আওয়ামি লিগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয়। (1) মিথ্যা মামলায় জড়ানো: শেখ মুজিবুরসহ অন্যান্য আওয়ামি লিগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তারা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই অভিযোগে পাক সরকার ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে শেখ মুজিবুরসহ ৩৫ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে। প্রবল আন্দোলনের চাপে পাক সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। (2) সাধারণ নির্বাচন: পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাকিস্তানের সরকার- বিরোধী অসন্তোষ বাড়তে থাকলে পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এই নির্বাচনে মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৪০টি আসনের মধ্যে জুলফিকার আলি ভুট্টোর পিপলস পাটি ...

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ  সূচনা: মিশর দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে ইংরেজ ও ফরাসিদের তত্ত্বাবধানে খনন করা একটি খাল হল সুয়েজ খাল। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ওই খাল খনন শুরু হলেও ১৮৬৯ থেকে এতে বাণিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি নামে এক সংস্থাকে একটি চুক্তির ভিত্তিতে ৯৯ বছরের জন্য খালটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের এক ঘোষণাবলে সুয়েজ খাল ও সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি—দুটিকেই জাতীয়করণ করে নেন। বিশ্বজুড়ে এই সমস্যাকেই সুয়েজ সংকট বোঝায়। সুয়েজ সংকটের কারণঃ (১) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দায়িত্ব: আরব-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব চলাকালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশগুলি ক্ষুব্ধ হয় এবং নাসেরের সঙ্গেও পাশ্চাত্য দেশগুলির মনোমালিন্য শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্সই সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী ডালেস যখন সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী দেশগুলিকে নিয়ে এক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেন তখ...

জোটনিরপেক্ষ নীতি কী ? জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব লেখো।

জোটনিরপেক্ষ নীতিঃ     দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে একদিকে সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী বা সমাজতান্ত্রিক জোট, অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী বা ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট গঠিত হয়। এই দুই জোটের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে, স্বাধীনভাবে উভয় জোটের সঙ্গেই বন্ধুত্ব বা সমদূরত্ব বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার নীতি জোটনিরপেক্ষ নীতি নামে পরিচিত। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের কারণ বা উদ্দেশ্য ঃ    মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী জোট ও সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোটের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত ‘ঠান্ডা লড়াই'-এর আর্বত থেকে নিজেকে দূরে রেখে, জাতীয় স্বার্থ ও নবলব্ধ স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য ভারত জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি গ্রহণ করে। ভারতে জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের কারণগুলি হল— [1] ভৌগোলিক সুরক্ষা : এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে এমন একটা জায়গায় ভারতের অবস্থান যা তাকে মধ্যপ্রাচ্য। ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী দেশে পরিণত করেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চিন, ব্রহ্মদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশি...