সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ আলোচনা করো।

গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ

গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কারণ আলোচনা করো।


        পৃথিবীর ইতিহাসে কোন সাম্রাজ্যই চিরস্থায়ী নয়, কালের অমোঘ নিয়মে একদা শক্তিশালী গুপ্ত সাম্রাজ্যকেও পতনের হাত থেকে রক্ষা করা যায়নি। সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের কৃতিত্বে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে বৃহৎ গুপ্ত সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, অল্পকালের মধ্যেই তা পতনের পথে ধাবিত হয়। কিন্তু কোন সাম্রাজ্যের উত্থান যেমন একদিন বা আকস্মিক ভাবে হয় না, তেমনি পতনও একদিনে বা একটি মাত্র কারণে ঘটে না। গুপ্ত সম্রাজ্যের পতনের জন্যও তাই একাধিক কারণের সমন্বয় খুঁজে পাওয়া যায়।

       গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল দুর্বল ও অযোগ্য উত্তরাধিকার। আমরা জানি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজার যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি রাজ্যের উন্নতি ও সংহতির প্রধান শর্তরূপে বিবেচিত হয়। স্কন্দগুপ্তকে গুপ্ত বংশের শেষ শক্তিশালী সম্রাট বলে ধরা হয়। তার পরবর্তী শাসকেরা ছিলেন দুর্বল ও অযোগ্য। তাদের পক্ষে বিশাল গুপ্ত সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব বজায় রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে প্রাদেশিক বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দিয়েছিল, তেমনি বৈদেশিক শক্তির আক্রমণ অবশ্যম্ভাবী হয়েছিল।

    ‌  কোন সুনির্দিষ্ট উত্তরাধিকার আইন গুপ্তরাজ পরিবারে ছিল না। ফলে সিংহাসনের দখল নিয়ে বার বার দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল। সমুদ্রগুপ্তের সময় থেকে শুরু করে স্কন্দগুপ্তের সময় পর্যন্ত এই ভ্রাতৃ বিরোধ বজায় ছিল। পরাক্রান্ত সম্রাটদের আমলে এর ক্ষতিকর দিকটি বোঝা না গেলেও পরবর্তী সময়ে এই ত্রুটি প্রকট হয়ে ওঠে।

       গুপ্ত সম্রাটগণ ক্রমশ যুদ্ধবিগ্রহের পথ থেকে সরে এসে আধ্যাত্মিক জগতের পথে পা বাড়ায়। কুমারগুপ্তের ‘অপ্রতিঘ’ নামাঙ্কিত মুদ্রা থেকে অনুমিত যে বৃদ্ধ বয়সে তিনি সন্ন্যাসধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাছাড়া গুপ্তরাজপরিবারে ক্রমশ বৌদ্ধধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। এবিষয়ে বৌদ্ধ পন্ডিত বসুবন্ধু উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন বালাদিত্যের আচার্য, এই বালাদিত্যই মায়ের অনুরোধে পরাজিত ও বন্দি হুণনেতা মিহিরকুলকে মুক্তি দেন। এই ঘটনা তাঁর মনের উদারতা প্রকাশ করলেও সাম্রাজ্যের পক্ষে ছিল চরম ক্ষতিকর।

    প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের বিদ্রোহ ও স্বাধীনতাকামীতা গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিল। সমুদ্রগুপ্ত পরাজিত রাজাকে নিয়মিত করদান ও আনুগত্যের বিনিময়ে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে গুপ্তরাজাদের দুর্বলতার কারণে এই প্রাদেশিক শাসকগণ স্বাধীন হয়ে বিদ্রোহ করলে তাদের দমন করা সম্ভব হয়নি। স্কন্দগুপ্ত পরবর্তী আঞ্চলিক শাসকেরা তাদের লিপিতে এমনকি গুপ্ত রাজাদের নাম পর্যন্ত বাদ দিতে থাকে।

   ত্রুটিপূর্ণ ভূমিদান ব্যবস্থা গুপ্তবংশের দুর্বলতাকে ঘনীভূত করেছিল। দেখা গেছে মৌর্য যুগে ভূমির নিচে অবস্থিত খনিজ পদার্থে রাজার অধিকার বজায় থাকত। একইভাবে দানকৃত গ্রামের প্রশাসনিক কর্তৃত্বও থাকত রাজার হাতে। কিন্তু গুপ্তযুগে ব্রাহ্মণ্য বা কোন সংস্থাকে ভূমিদান করলে, সেই ভূমির উপর রাজার কোন দাবী থাকত না। এমনকি ঐভূমির প্রশাসনিক কর্তৃত্বও দানগ্রহীতার উপর বর্তার্ত।

      গুপ্তদের সমসাময়িক একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল বকাটকরা। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত এদের সঙ্গে মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তুললেও পরবর্তীকালে এই মৈত্রীতে ফাটল ধরেছিল। কুমারগুপ্ত বকাটকদের আক্রমণ করলে বকাটকদের সঙ্গে গুপ্তদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তাই বকাটকরাজ নরেন্দ্র সেন গুপ্ত সাম্রাজ্য আক্রমণকারী পুষ্যমিত্রদের সাহায্য করেছিলেন প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য। জুনাগড় লিপিতে উল্লেখিত বৈরি রাজাগণ ছিলেন সম্ভবত এই বকাটকগণ। 

   গুপ্তরাজাদের নিজস্ব বা প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে কোন সুগঠিত সেনাবাহিনী ছিল কিনা তা জানা যায় না। এমনকি হরিষেণের প্রশস্তিতেও গুপ্ত সৈন্যবাহিনীর কোন উল্লেখ নেই। তাছাড়া গুপ্তদের ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রের মান সম্পর্কেও সঠিক জানা যায় না। পুষ্যমিত্র বা হুণ আক্রমণকারীদের ব্যবহৃত অস্ত্রের মোকাবিলা করার মত অস্ত্র খুব সম্ভব গুপ্তদের ছিল না।

      পরিশেষে হুণ আক্রমণ গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের শেষ অধ্যায় রচনা করেছিল। স্কন্দগুপ্তের আমলে সাফল্যের সঙ্গে হুণ আক্রমণ প্রতিরোধ করা গেলেও পরবর্তীকালে তোরমানের নেতৃত্বে হুণরা আবার আক্রমণ চালায়। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে দীর্ণ গুপ্ত সাম্রাজ্য এই আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়। হুণ আক্রমণের মোকাবিলা করতে গিয়ে গুপ্ত রাজকোষে ব্যাপক চাপ পড়ে, যা সাম্রাজ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব আলোচনা করো।

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব: ভূমিকা: আধুনিক বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির উপনিবেশ প্রসারের কৌশল ‘নয়া উপনিবেশবাদ’ ও ‘নয়া সাম্রাজ্যবাদ’ নামে পরিচিত। উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে জে. এ. হবসন এবং ভি. আই. লেনিন সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ সম্পর্কে তাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। হবসনের ব্যাখ্যা:  ব্রিটিশ অর্তনীতিবিদ জে. এ. হবসন তাঁর ‘সাম্রাজ্যবাদঃ একটি সমীক্ষা’ নামক গ্রন্থে সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতাবাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর ব্যাখ্যার প্রধান বিষয়গুলি হল—  [1] অর্থনৈতিক মুনাফা লাভ: হবসনের মতে, সাম্রাজ্যবাদের পিছনে কোনো মহৎ, বা উচ্চতর লক্ষ্য নয়, অর্থনৈতিক মুনাফাই ছিল নয়া উপনিবেশকারীদের প্রধানতম উদ্দেশ্য। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় সমাজে ধনসম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্যের ফলে পুঁজিপতিদের হাতে যে ‘মূলধনের পাহাড়' সৃষ্টি হয়, সেই মূলধন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে তারা মুনাফা লাভের পরিকল্পনা করে। [2] পুঁজিপতিদের চাপ: হবসন মনে করেন যে, নতুন ক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ করা...

অবশিল্পায়ন কি ? ঔপনিবেশিক ভারতে অবশিল্পায়নের কারণ ও ফলাফল লেখো ।

অবশিল্পায়নঃ        অবশিল্পায়ন বলতে বোঝায় শিল্পায়নের বিপরীত বা শিল্পের অধোগতি। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের চিরাচরিত ও ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্প-কুটিরশিল্পের ধ্বংস সাধনই মূলত অবশিল্পায়ন। সব্যসাচী ভট্টাচার্যের মতে যদি দেশের মানুষ শিল্প-কর্ম ছেড়ে চাষ-আবাদে জীবিকা অর্জন শুরু করে অথবা জাতীয় কৃষিজ ও অংশ বাড়তে থাকে এবং শিল্পজ অংশ কমতে থাকে তাকে অব-অবশিল্পায় বলে। অবশিল্পায়নের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের অবশিল্পায়ন সম্পর্কে প্রথম পর্বে দাদাভাই নাও রোজি, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনীপাম দত্ত জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনী পামদত্ত, গ্যাডগিল, বি.ডি. বসু, নরেন্দ্রকৃয় সিংহ, বিপান চন্দ্র, অমিয় বাগচি প্রমুখ ঐতিহাসিক আলোচনা করেছেন। অব-শিল্পায়নের কারণঃ (১) কাঁচামালের রপ্তানি: ভারতীয় শিল্পের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে ইংল্যান্ডে কাঁচামাল রপ্তানি শুরু হয়। ভারত ইংল্যান্ডের কলকারখানার খোলা বাজার ও কাঁচামাল সরবরাহের উৎসে পরিণত হয়। ভারত থেকে তুলো, নীল, কফি, চা, রেশম প্রভৃতি ইং...

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এই যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কী ছিল ?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: সূচনা: ১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে আওয়ামি লিগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয়। (1) মিথ্যা মামলায় জড়ানো: শেখ মুজিবুরসহ অন্যান্য আওয়ামি লিগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তারা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই অভিযোগে পাক সরকার ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে শেখ মুজিবুরসহ ৩৫ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে। প্রবল আন্দোলনের চাপে পাক সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। (2) সাধারণ নির্বাচন: পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাকিস্তানের সরকার- বিরোধী অসন্তোষ বাড়তে থাকলে পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এই নির্বাচনে মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৪০টি আসনের মধ্যে জুলফিকার আলি ভুট্টোর পিপলস পাটি ...

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ  সূচনা: মিশর দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে ইংরেজ ও ফরাসিদের তত্ত্বাবধানে খনন করা একটি খাল হল সুয়েজ খাল। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ওই খাল খনন শুরু হলেও ১৮৬৯ থেকে এতে বাণিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি নামে এক সংস্থাকে একটি চুক্তির ভিত্তিতে ৯৯ বছরের জন্য খালটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের এক ঘোষণাবলে সুয়েজ খাল ও সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি—দুটিকেই জাতীয়করণ করে নেন। বিশ্বজুড়ে এই সমস্যাকেই সুয়েজ সংকট বোঝায়। সুয়েজ সংকটের কারণঃ (১) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দায়িত্ব: আরব-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব চলাকালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশগুলি ক্ষুব্ধ হয় এবং নাসেরের সঙ্গেও পাশ্চাত্য দেশগুলির মনোমালিন্য শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্সই সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী ডালেস যখন সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী দেশগুলিকে নিয়ে এক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেন তখ...

জোটনিরপেক্ষ নীতি কী ? জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব লেখো।

জোটনিরপেক্ষ নীতিঃ     দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে একদিকে সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী বা সমাজতান্ত্রিক জোট, অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী বা ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট গঠিত হয়। এই দুই জোটের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে, স্বাধীনভাবে উভয় জোটের সঙ্গেই বন্ধুত্ব বা সমদূরত্ব বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার নীতি জোটনিরপেক্ষ নীতি নামে পরিচিত। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের কারণ বা উদ্দেশ্য ঃ    মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী জোট ও সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোটের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত ‘ঠান্ডা লড়াই'-এর আর্বত থেকে নিজেকে দূরে রেখে, জাতীয় স্বার্থ ও নবলব্ধ স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য ভারত জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি গ্রহণ করে। ভারতে জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের কারণগুলি হল— [1] ভৌগোলিক সুরক্ষা : এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে এমন একটা জায়গায় ভারতের অবস্থান যা তাকে মধ্যপ্রাচ্য। ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী দেশে পরিণত করেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চিন, ব্রহ্মদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশি...