সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইউরােপে ‘ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের’ পিছনে কোন কোন ঘটনা দায়ী ছিল ?

অথবা, ইউরোপে‌ ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের কারণগুলি কি ছিল ?

ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের জন্য দায়ী ঘটনাকারণ 

ইউরােপে ‘ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধের’ পিছনে কোন কোন ঘটনা দায়ী ছিল ?

      দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের ফলে ফ্রান্স যখন সম্পূর্ণভাবে বিধবস্তু এবং স্পেন যখন নেদারল্যান্ডের বিদ্রোহীদের দমন করতে ব্যস্ত, জার্মানী কিন্তু সেই সময় তুলনামূলকভাবে রাজনীতি ও ধর্মক্ষেত্রে শাস্তি উপভোগ করার সুযোগ লাভ করতে সমর্থ হয়েছিল। পঞ্চম চার্লসের পরবর্তীকালের পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের দুজন সম্রাট ফার্দিনান্দ ও দ্বিতীয় ম্যাক্সিমিলিয়ান ছিলেন উদার মনোভাবাপন্ন। এর ফলে তাঁদের রাজত্বকালে প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ জার্মানীতে যথেষ্ট পরিমাণে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সমর্থ হয়। কিন্তু অল্পদিনের মধে প্রতিসংস্কার আন্দোলনের আঘাতে প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়। দলে দলে জেসুইটগণ জার্মানীতে উপস্থিত হন এবং প্রচণ্ড ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের দ্বারা প্রায় অর্ধেক জার্মানীতে রোমান ক্যাথলিক ধর্মের ছত্রছায়ায় আনয়ন করতে সমর্থ হন। এই সময় পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন রুডলফ। তিনি তাঁর পূর্বসূরীদের ধর্মসহিষ্ণুতা নীতি পরিত্যাগ করেন এবং প্রোটেস্ট্যান্টদের প্রতি ক্যাথলিকদের কঠোর ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানান। জার্মান ডীয়েট (Diet) এবং ইম্পিরিয়াল চেম্বারেও ক্যাথলিকগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল, সুতরাং তারা সকলে এ ব্যাপারে প্রোটেস্ট্যান্টদের বিরুদ্ধেই বিপক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে শুরু করে। এই সময় স্বাধীন নগরী ডাউনওয়ার্থের অধিকাংশ লোকই ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বী, ক্যাথলিকদের একটি শোভাযাত্রার প্রতি প্রেটোস্ট্যান্টগণ বিরূপ মন্তব্য করায় ক্যাথলিক ব্যাভেরিয়া এই নগরীটির স্বাধীনতা হরণ করে নিজের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়। প্রোটেস্ট্যান্টগণ এইরূপ আগ্রাসন নীতি তীব্র প্রতিবাদ করে কিন্তু তাদের প্রতিবাদকে কোন গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। এর ফলে উভায়পক্ষের সম্পর্কের এরূপ অবনতি ঘটে যে, প্যাল্লাস্টাইন-এর ইলেকটরের নেতৃত্বে ক্যালভিনপন্থী প্রোটেস্ট্যানগণ পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য একটি শক্তিজোট গঠন করে অপরদিকে ক্যাথলিকগণ নিজেদের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখার জন্য ব্যাভেরিয়ার ম্যাক্সিমিলিয়ানে নেতৃত্বে অপর একটি শক্তি জোট গঠন করে। এইভাবে জার্মানী পরস্পরবিরোধী যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে।

        ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে সম্পাদিত অগসবার্গের চুক্তির বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোও জার্মানী ধর্মসংক্রান্ত সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছিল। এই সন্ধিতে ক‍্যালভিনপন্থীদের কোন অধিকার স্বীকৃত হয়নি। ঐই সন্ধিতে বলা হয়েছিল যে ক্যাথলিক পন্থী কোন বিশপ প্রটেস্ট্যান্ট ধর্ম গ্রহন করলে তিনি বিশপের পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য থাকবেন। একই সঙ্গে এই পদের সঙ্গে যুক্ত সবরকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। পরবর্তী সময়ে প্রটেস্ট্যান্টরা এই বৈষ্যমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শুরু করে। এই রকম পরিস্থিতিতে ক্যাথলিকদের সঙ্গে তাদের সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে। এর ফলে জার্মানীতে ক্যালভিনপন্থীদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পড়ে । আত্মরক্ষার জন্যই তারা অন্যান্য ধর্মীয় মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়ে।

       তবে ত্রিশ বছরের ধর্মসংক্রান্ত যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল বোহেমিয়ার ঘটনা। বোহেমিয়ার অধিকাংশ অধিবাসীই ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট এবং প্রোটেস্ট্যান্ট বিরোধী কার্যকলাপের জন্য দ্বিতীয় ফার্দিন্যান্দকে তারা খুব অপছন্দ করত। তবে দ্বিতীয় ফার্দিন্যান্দের বিরুদ্ধে তাদের বিরাগ চরমে ওঠে যখন সম্রাটের প্রাগ নগরীর একটি প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চকে ধবংস করা হয়। দ্বিতীয় ফার্দিনান্দের এই ব্যবস্থার প্রতিবাদে স্থানীয় অধিবাসীরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, রাজকর্মচারীদের দুর্গ প্রাসাদের গবাক্ষ পথে বাইরে নিক্ষেপ করে এবং প্যালাটাইনের ইলেকটর ফ্রেডারিককে সম্রাট হিসাবে নির্বাচিত করে মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়। ফ্রেডারিকের পক্ষ থেকে এই মুকুট গ্রহণের অর্থ হল সরাসরি দ্বিতীয় ফার্দিন্যান্দের রাজকীয় পদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ঞ্জাপন করা। দ্বিতীয় ফার্দিন্যান্দের পক্ষে এইরূপ অসম্মান সহ্য করা সম্ভব ছিল না। ফলে অবিলম্বে ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এই যুদ্ধ ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ত্রিশ বছর স্থায়ী হয়েছিল। এই কারণে এই যুদ্ধ ত্রিশ বছর ব্যাপী যুদ্ধ নামে পরিচিত।

      ধর্মীয় কারণ ছাড়াও ত্রিশ বছর ব্যাপী যুদ্ধের জন্য অন্যান্য কারন দায়ী ছিল। অস্ট্রিয়া ও ফরাসি রাজবংশের প্রতিদ্বন্দ্বীতা ত্রিশ বছর ব্যাপি যুদ্ধের এক অন্যতম কারণ ছিল। অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের সংঘাতের মূল কারন ছিল নিজ প্রভাবাধীন এলাকা। অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের সংঘাত ত্রিশ বছর ব্যাপি যুদ্ধে জরিয়ে পড়ে। সুইডেনের আবির্ভাব ঘটে বৃহৎশক্তিরূপে ফলে তার লক্ষ ছিল উত্তর জার্মানি তথা বাল্টিক অঞ্চলে প্রাধান্য স্থাপনের প্রচেষ্টা। এক্ষেত্রে তাকে শুধু অস্ট্রিয়া নয়, ডেনমার্ক ও পোলান্ডের সম্মুখিন হতে হয়েছিল। তার উপর ছিল জার্মানীর ক্যাথলিক প্রটেস্ট্যান্টদের বিরোধ এই অবস্থাতে বৃহৎ শক্তিবর্গগুলি নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থে ত্রিশ বছর ব্যাপি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব আলোচনা করো।

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে হবসন-লেনিনের তত্ত্ব: ভূমিকা: আধুনিক বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির উপনিবেশ প্রসারের কৌশল ‘নয়া উপনিবেশবাদ’ ও ‘নয়া সাম্রাজ্যবাদ’ নামে পরিচিত। উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে জে. এ. হবসন এবং ভি. আই. লেনিন সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদ সম্পর্কে তাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। হবসনের ব্যাখ্যা:  ব্রিটিশ অর্তনীতিবিদ জে. এ. হবসন তাঁর ‘সাম্রাজ্যবাদঃ একটি সমীক্ষা’ নামক গ্রন্থে সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতাবাদের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর ব্যাখ্যার প্রধান বিষয়গুলি হল—  [1] অর্থনৈতিক মুনাফা লাভ: হবসনের মতে, সাম্রাজ্যবাদের পিছনে কোনো মহৎ, বা উচ্চতর লক্ষ্য নয়, অর্থনৈতিক মুনাফাই ছিল নয়া উপনিবেশকারীদের প্রধানতম উদ্দেশ্য। পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় সমাজে ধনসম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্যের ফলে পুঁজিপতিদের হাতে যে ‘মূলধনের পাহাড়' সৃষ্টি হয়, সেই মূলধন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে তারা মুনাফা লাভের পরিকল্পনা করে। [2] পুঁজিপতিদের চাপ: হবসন মনে করেন যে, নতুন ক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ করা...

অবশিল্পায়ন কি ? ঔপনিবেশিক ভারতে অবশিল্পায়নের কারণ ও ফলাফল লেখো ।

অবশিল্পায়নঃ        অবশিল্পায়ন বলতে বোঝায় শিল্পায়নের বিপরীত বা শিল্পের অধোগতি। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের চিরাচরিত ও ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্প-কুটিরশিল্পের ধ্বংস সাধনই মূলত অবশিল্পায়ন। সব্যসাচী ভট্টাচার্যের মতে যদি দেশের মানুষ শিল্প-কর্ম ছেড়ে চাষ-আবাদে জীবিকা অর্জন শুরু করে অথবা জাতীয় কৃষিজ ও অংশ বাড়তে থাকে এবং শিল্পজ অংশ কমতে থাকে তাকে অব-অবশিল্পায় বলে। অবশিল্পায়নের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের অবশিল্পায়ন সম্পর্কে প্রথম পর্বে দাদাভাই নাও রোজি, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনীপাম দত্ত জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনী পামদত্ত, গ্যাডগিল, বি.ডি. বসু, নরেন্দ্রকৃয় সিংহ, বিপান চন্দ্র, অমিয় বাগচি প্রমুখ ঐতিহাসিক আলোচনা করেছেন। অব-শিল্পায়নের কারণঃ (১) কাঁচামালের রপ্তানি: ভারতীয় শিল্পের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে ইংল্যান্ডে কাঁচামাল রপ্তানি শুরু হয়। ভারত ইংল্যান্ডের কলকারখানার খোলা বাজার ও কাঁচামাল সরবরাহের উৎসে পরিণত হয়। ভারত থেকে তুলো, নীল, কফি, চা, রেশম প্রভৃতি ইং...

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এই যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কী ছিল ?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: সূচনা: ১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে আওয়ামি লিগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয়। (1) মিথ্যা মামলায় জড়ানো: শেখ মুজিবুরসহ অন্যান্য আওয়ামি লিগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তারা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই অভিযোগে পাক সরকার ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে শেখ মুজিবুরসহ ৩৫ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে। প্রবল আন্দোলনের চাপে পাক সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। (2) সাধারণ নির্বাচন: পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাকিস্তানের সরকার- বিরোধী অসন্তোষ বাড়তে থাকলে পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এই নির্বাচনে মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৪০টি আসনের মধ্যে জুলফিকার আলি ভুট্টোর পিপলস পাটি ...

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ  সূচনা: মিশর দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে ইংরেজ ও ফরাসিদের তত্ত্বাবধানে খনন করা একটি খাল হল সুয়েজ খাল। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ওই খাল খনন শুরু হলেও ১৮৬৯ থেকে এতে বাণিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি নামে এক সংস্থাকে একটি চুক্তির ভিত্তিতে ৯৯ বছরের জন্য খালটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের এক ঘোষণাবলে সুয়েজ খাল ও সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি—দুটিকেই জাতীয়করণ করে নেন। বিশ্বজুড়ে এই সমস্যাকেই সুয়েজ সংকট বোঝায়। সুয়েজ সংকটের কারণঃ (১) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দায়িত্ব: আরব-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব চলাকালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশগুলি ক্ষুব্ধ হয় এবং নাসেরের সঙ্গেও পাশ্চাত্য দেশগুলির মনোমালিন্য শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্সই সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী ডালেস যখন সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী দেশগুলিকে নিয়ে এক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেন তখ...

জোটনিরপেক্ষ নীতি কী ? জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব লেখো।

জোটনিরপেক্ষ নীতিঃ     দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে একদিকে সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী বা সমাজতান্ত্রিক জোট, অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী বা ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট গঠিত হয়। এই দুই জোটের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে, স্বাধীনভাবে উভয় জোটের সঙ্গেই বন্ধুত্ব বা সমদূরত্ব বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনার নীতি জোটনিরপেক্ষ নীতি নামে পরিচিত। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের কারণ বা উদ্দেশ্য ঃ    মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী জোট ও সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোটের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব থেকে উদ্ভূত ‘ঠান্ডা লড়াই'-এর আর্বত থেকে নিজেকে দূরে রেখে, জাতীয় স্বার্থ ও নবলব্ধ স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য ভারত জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি গ্রহণ করে। ভারতে জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের কারণগুলি হল— [1] ভৌগোলিক সুরক্ষা : এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে এমন একটা জায়গায় ভারতের অবস্থান যা তাকে মধ্যপ্রাচ্য। ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী দেশে পরিণত করেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চিন, ব্রহ্মদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশি...