সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনঃ ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় হল ভারত ছাড়ো বা আগস্ট আন্দোলন । সিপাহি বিদ্রোহের পর এত বড়ো গণ আন্দোলন ভারতে আর ঘটেনি। গান্ধিজি 'হরিজন' পত্রিকাতে লিখলেন (১৯৪২ খ্রি, ২ এপ্রিল) ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান চাই। ভারতের স্বাধীনতা চাই কেবল ভারতের স্বার্থে নয়—বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য, নাৎসিবাদ, ফ্যাসিবাদ, সমরবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং এক জাতির ওপর অন্য জাতির আক্রমণের অবসানের জন্য। পটভূমি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় ক্রিপস প্রস্তাবের আগমন ও প্রস্থান, ভারতবাসীর তীব্র স্বাধীনতা- আকাঙ্ক্ষা, মূল্যবৃদ্ধি, জাপানি আক্রমণের ভয়, ব্রিটিশ সেনাদের অত্যাচার সবকিছু মিলেমিশে এক ভবিষ্যৎ গণ আন্দোলনের পটভূমি রচনা করে। গান্ধিজি নিজে এই আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মরিয়া ছিলেন। তিনি বলেন ভারতকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করে ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে চলে যাক। যদি তা না হয় তবে অরাজকতাও শ্রেয়, আপনারা ভারত ছাড়ুন।  আন্দোলনের সূচনা : বোম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত (১৯৪২ খ্রি., ৮ আগস্ট) নিখিল ভারত কংগ্রেস সমিতির বিপুল ভোটে গান্ধিজির ভারত ছাড়ো প্রস্তাব পাস হয়। ঘোষণা করা হয় ৯ আগস্...

কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটঃ ভুমিকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঠান্ডা যুদ্ধের সময় আর একটি সংকট বিশ্বকে আণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল, তা ছিল কিউবা সংকট। কিউবা হল ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে সর্ববৃহৎ দ্বীপ। দেশটি চিনি উৎপাদনের জন্য জগৎবিখ্যাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত লাইন ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল এই দেশটির উপর। নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কিউবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্যালজেনিকো বাতিস্তা ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কিউবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। (১) ফিদেল কাস্ত্রোর ক্ষমতালাভ: বাতিস্তা সরকারের আমলে দেশে দারিদ্র্য, দুর্নীতি, অসাম্য, স্বৈরাচার প্রভৃতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। ফলে মার্কিন মদতপুষ্ট এই সরকারের প্রতি কিউবার জনগণের সমর্থন ছিল না। বাতিস্তা সরকারের অপদার্থতার সুযোগে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ১ জানুয়ারি ফিদেল কাস্ত্রো কিউবায় এক অভ্যন্তরীণ বিপ্লব ঘটিয়ে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেন। কিউবাতে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগী হলে আমেরিকার সাথে কিউ...

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এই যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কী ছিল ?

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: সূচনা: ১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে আওয়ামি লিগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয়। (1) মিথ্যা মামলায় জড়ানো: শেখ মুজিবুরসহ অন্যান্য আওয়ামি লিগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তারা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই অভিযোগে পাক সরকার ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে শেখ মুজিবুরসহ ৩৫ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে। প্রবল আন্দোলনের চাপে পাক সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। (2) সাধারণ নির্বাচন: পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাকিস্তানের সরকার- বিরোধী অসন্তোষ বাড়তে থাকলে পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এই নির্বাচনে মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৪০টি আসনের মধ্যে জুলফিকার আলি ভুট্টোর পিপলস পাটি ...

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

কোম্পানির আমলে ভারতের বিভিন্ন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থাঃ সূচনা: ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর বাংলার গভর্নর লর্ড ক্লাইভ পূর্বতন মুঘল আমলের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা বজায় রাখেন। পরবর্তীকালে ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলার গভর্নর-জেনারেল নিযুক্ত হয়ে ভারতের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে, রাজস্ব আদায়ের ভার কোম্পানির হাতে তুলে দেন। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতবর্ষে যে সমস্ত ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাগুলি প্রবর্তিত হয়েছিল সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল। (১) পাঁচসালা ও একসালা ব্যবস্থা: ওয়ারেন হেস্টিংস 1772-1772 খ্রি: পর্যন্ত পাঁচসালা বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেছিলেন। প্রতিটি জেলায় ঘুরে নিলামের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য জমি বন্টনের জন্য ভ্রাম্যমান কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। 1773 খ্রি: ‘রেগুলেটিং অ্যাক্ট’ দ্বারা রাজস্ব ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তন আনা হয়। পাঁচসালা বন্দোবস্তের কিছু অসুবিধা দেখে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই 1775 খ্রি: এই ব্যবস্থা ভেঙে ‘একসালা বন্দোবস্ত’ প্রবর্তন করা হয়। 1776 খ্রি: ‘আমিনি কমিশন’ নিয়োগ করা হয়। পাঁচসালা ও একসালা বন্দোবস্ত কৃষকদের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেনি। জমির উন্নতির কথা না ভে...

মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা কী ছিল ?

মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশনঃ সূচনা : ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেলের পরিকল্পনা অনুসারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর নতুন ব্রিটিশ মন্ত্রীসভা ভারতীয় নেতৃবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্য তার তিনজন সদস্যকে ভারতে পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয় (১৯৪৬ খ্রি., ২৪ মার্চ)। ভারত-সচিব লর্ড পেথিক লরেন্স , বাণিজ্য- সচিব স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস এবং নৌ-সচিব মি. এ. ভি. আলেকজান্ডার —এই তিনজন মন্ত্রীকে নিয়ে গড়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই দলটি ভারত-ইতিহাসে ক্যাবিনেট মিশন বা মন্ত্রী মিশন (১৯৪৬ খ্রি.) নামে খ্যাত। মন্ত্রী মিশনের উদ্দেশ্য:   মন্ত্রী মিশনের উদ্দেশ্য ছিল প্রধানত দুটি– [1] ভারতকে স্বাধীনতা দান এবং ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার জন্য যে গণপরিষদ তৈরি হবে তার গঠন, পদ্ধতি ও নীতি নির্ধারণ করা।  [2] ভারতের সকল রাজনৈতিক দলগুলির বৃহত্তর মতৈক্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালের জন্য একটি জনপ্রতিনিধিভিত্তিক সরকার গঠন করা। মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব  ঃ মন্ত্রী মিশনের প্রধান প্রস্তাবগুলি হলো—  [1] যুক্তরাষ্ট্র গঠন: ভারতে একটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হবে। দেশীয় রাজ্যগুলি এই যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিতে পারবে।  [2] ক্...

ক্রিপস মিশন কী ? ক্রিপস মিশন ব্যর্থতার কারণ কী ?

ক্রিপস মিশন ঃ ভুমিকাঃ ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ক্রিপস্ মিশন ভারতে আসে (১৯৪২ খ্রিস্টাব্দ) ও ভারতকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে ২৯ মার্চ একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করে যা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত। ক্রিপস মিশনের উদ্দেশ্য:   দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে জাপান অতি দ্রুত দ.পূ. এশিয়ার এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল অধিকার করে ভারতের দ্বারপ্রান্তে এসে হাজির হয়। এমতাবস্থায় জাপানকে প্রতিহত করতে মিত্রশক্তির পক্ষে ভারতের সক্রিয় সাহায্য লাভের আশায় চার্চিল তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপকে ভারতে পাঠান (মার্চ, ১৯৪২ খ্রি.)। মিত্রশক্তিকে ভারত যাতে সমস্ত দিক দিয়ে সাহায্য দেয়, তাতে রাজি করানোই ছিল ক্রিপসের ভারত আগমনের প্রধান কারণ বা তাঁর প্রস্তাবগুলির মূল লক্ষ্য। ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতার কারণঃ ক্রিপস প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ—  [1] পূর্ণ স্বাধীনতা দানের অনুল্লেখ : এই প্রস্তাবটিতে পূর্ণ স্বাধীনতা দানের কোনো উল্লেখ ছিল না। ব্রিটিশ সরকার, বিশেষত চার্চিলের অনিচ্ছুক মনোভাব এই প্রস্তাবকে ব্যর্থ করেছিল। তিনি কখনোই চাননি ভারত স্বাধীন ...

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহের কারণ ও তাংপর্য আলোচনা করো।

নৌবিদ্রোহের পটভূমি বা কারণঃ ভূমিকাঃ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষপর্বে এক উল্লেখযোগ্য সংগ্রাম হল ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহ। আজাদ হিন্দ সেনাদের বিচার এবং নৌবাহিনীর অভ্যন্তরে ভারতীয়দের অবহেলা অমর্যাদা, ভারতীয় নৌসেনাদের মনে বিদ্রোহী মনোভাব জাগিয়ে তোলে। সুদীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের যাত্রাপথে এই বিদ্রোহ ছিল শেষ প্ল্যাটফর্ম, যা অতিক্রম করে ভারতবাসী পেয়েছিল স্বাধীনতার স্বাদ। ড. সুমিত সরকারের মতে— নৌসেনাদের অভ্যুত্থান আজাদ হিন্দ ফৌজের মুক্তিযুদ্ধের থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিদ্রোহের সূচনা: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে বোম্বাই বন্দরে রয়াল ইন্ডিয়ান নেভির 'তলোয়ার' জাহাজের রেডিয়ো অপারেটর বলাই দত্ত শ্লোগান লেখেন ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘British Quit India’, ‘বন্দেমাতরম্’, ‘জয়হিন্দ’ ইত্যাদি। এই অপরাধে নৌকর্তৃপক্ষ বলাই দত্তকে পদচ্যুত করে। এর প্রতিবাদে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভির প্রধান এম. এস. খানের নেতৃত্বে ১৫০০ নাবিক বিদ্রোহ ঘোষণা করে (১৮ ফেব্রুয়ারি)। বোম্বাইয়ের ২২টি জাহাজে এবং করাচির হিন্দুস্থান জাহাজে এই বিদ্রোহের সূচনা ঘটে। বিদ্রোহের কারণঃ নৌবিদ্রোহের অন্যতম কয়েকটি কারণ...

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্র বসুর অবদান পর্যালোচনা করো ।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সুভাষচন্দ্রের ভূমিকাঃ ভূমিকা: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস যাঁর নামটি এক বিশাল জ্যোতিষ্কের মতো চিরদিন ভাস্বর হয়ে থাকবে তিনি হলেন সুভাষচন্দ্র বসু। দুঃসাধ্যের সাধক, দুর্গম পথের নির্ভীক এই যাত্রীকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ আশীর্বাদ করে বলেছিলেন— “সুভাষচন্দ্র, বাঙালি কবি আমি, বাংলা দেশের হয়ে তোমাকে দেশনায়কের পদে বরণ করি।” (১) রাজনীতিতে অংশগ্রহণ: ছাত্রজীবন থেকেই সুভাষচন্দ্র ইংরেজ শাসনবিরোধী এক তীব্র মনোভাব পোষণ করতেন। তাই তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের লোভনীয় চাকরিকে প্রত্যাখ্যান করেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অনুপ্রেরণায় তিনি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। কংগ্রেসের মধ্যে যে বামপন্থী চিন্তাধারার অনুপ্রবেশ ঘটে তাতে জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে তিনিও নেতৃত্ব দেন। (২) গান্ধিজির সঙ্গে মতবিরোধ: ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে হরিপুরা কংগ্রেসে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। সুভাষচন্দ্রের সংগ্রামী দৃষ্টিভঙ্গি গান্ধিজি ও তাঁর অনুগামীদের ক্ষুব্ধ করে। গান্ধিজি ত্রিপুরি কংগ্রেসে (১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ) সভাপতি হিসেবে পট্টভি সীতারামাইয়ার নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু সুভাষচন্দ্র পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। এত...

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

সুয়েজ সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ  সূচনা: মিশর দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে ইংরেজ ও ফরাসিদের তত্ত্বাবধানে খনন করা একটি খাল হল সুয়েজ খাল। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ওই খাল খনন শুরু হলেও ১৮৬৯ থেকে এতে বাণিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি নামে এক সংস্থাকে একটি চুক্তির ভিত্তিতে ৯৯ বছরের জন্য খালটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের এক ঘোষণাবলে সুয়েজ খাল ও সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি—দুটিকেই জাতীয়করণ করে নেন। বিশ্বজুড়ে এই সমস্যাকেই সুয়েজ সংকট বোঝায়। সুয়েজ সংকটের কারণঃ (১) ব্রিটেন ও ফ্রান্সের দায়িত্ব: আরব-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব চলাকালে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে আরব দেশগুলি ক্ষুব্ধ হয় এবং নাসেরের সঙ্গেও পাশ্চাত্য দেশগুলির মনোমালিন্য শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেন ও ফ্রান্সই সুয়েজ খালের ওপর সবথেকে বেশি নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী ডালেস যখন সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী দেশগুলিকে নিয়ে এক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেন তখ...

চোল রাজাদের সামুদ্রিক কার্যকলাপ সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা, রাজরাজ ও প্রথম রাজেন্দ্র চোলের নেতৃত্বে নৌ সাম্রাজ্যের বিস্তারের ইতিহাস লেখো। চোল রাজাদের সামুদ্রিক কার্যকলাপঃ       প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে চোল যুগ সামুদ্রিক কার্যকলাপের জন্য বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। রাজরাজের শাসনকাল থেকে প্রথম কুলোতুঙ্গের শাসনকাল পর্যন্ত প্রায় ১৩৫ বছর চোল রাজারা সামুদ্রিক সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান। ঐতিহাসিক পানিক্করের মতে, প্রাচীন ভারতের শুধু চোল রাজারাই সামুদ্রিক শক্তির বিস্তারে উৎকর্ষ দেখিয়েছিলেন। চোল রাজাদের নৌ সাম্রাজ্য বিস্তারের পিছনে বাণিজ্যের বিস্তার, উপনিবেশ স্থাপন, আরব আক্রমণ প্রতিহত করা প্রভৃতি বিষয়গুলি মূল কারণ হিসেবে কাজ করেছিল।        রাজরাজ ও রাজেন্দ্র চোল পিতা-পুত্র চোলদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় চোল ইতিহাস শতাব্দীকাল ব্যাপী ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। চোল রাজ্য ছিল একটি ক্ষুদ্র আঞ্চলিক রাজ্য, যাকে রাজরাজ ও রাজেন্দ্র চোল ভারতের মূল ভূখন্ড ছাড়িয়ে তাদের নৌবহরের দাপটে বঙ্গোপসাগরকে এক বিরাট সামুদ্রিক সাম্রাজ্যে পরিণত করে। তাই বলা যায় তার...

অবশিল্পায়ন কি ? ঔপনিবেশিক ভারতে অবশিল্পায়নের কারণ ও ফলাফল লেখো ।

অবশিল্পায়নঃ        অবশিল্পায়ন বলতে বোঝায় শিল্পায়নের বিপরীত বা শিল্পের অধোগতি। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের চিরাচরিত ও ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্প-কুটিরশিল্পের ধ্বংস সাধনই মূলত অবশিল্পায়ন। সব্যসাচী ভট্টাচার্যের মতে যদি দেশের মানুষ শিল্প-কর্ম ছেড়ে চাষ-আবাদে জীবিকা অর্জন শুরু করে অথবা জাতীয় কৃষিজ ও অংশ বাড়তে থাকে এবং শিল্পজ অংশ কমতে থাকে তাকে অব-অবশিল্পায় বলে। অবশিল্পায়নের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের অবশিল্পায়ন সম্পর্কে প্রথম পর্বে দাদাভাই নাও রোজি, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনীপাম দত্ত জাতীয়তাবাদী নেতা এবং পরবর্তীকালে রজনী পামদত্ত, গ্যাডগিল, বি.ডি. বসু, নরেন্দ্রকৃয় সিংহ, বিপান চন্দ্র, অমিয় বাগচি প্রমুখ ঐতিহাসিক আলোচনা করেছেন। অব-শিল্পায়নের কারণঃ (১) কাঁচামালের রপ্তানি: ভারতীয় শিল্পের ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে ইংল্যান্ডে কাঁচামাল রপ্তানি শুরু হয়। ভারত ইংল্যান্ডের কলকারখানার খোলা বাজার ও কাঁচামাল সরবরাহের উৎসে পরিণত হয়। ভারত থেকে তুলো, নীল, কফি, চা, রেশম প্রভৃতি ইং...

চৌথ, সরদেশমুখী এবং সরঞ্জাম শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করো।

চৌথ, সরদেশমুখী এবং  সরঞ্জাম : চৌথ ও সরদেশমুখী:   ভূমিরাজস্ব  ছাড়া  শিবাজি প্রবর্তিত দুটি কর ছিল চৌথ ও সরদেশমুখী। শিবাজি তাঁর বিরাট সেনাবাহিনীর জন্য আর্থিক সংস্থানের জন্য প্রতিবেশি অঞ্চল, বিজাপুর ও মুঘল অধিকৃত অঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ নামে দুটি কর আদায়ের নীতি কার্যকর করেন। ‘চৌথ’ ছিল রাজস্বের এক-চতুর্থাংশ। ‘সরদেশমুখী’ ছিল এক-দশামংশ। যে সকল অঞ্চল স্বেচ্ছায় ‘চৌথ’ দিত না, তারা মারাঠা অশ্বারোহী সেনার দ্বারা আক্রান্ত ও লুন্ঠিত হত। আসলে মারাঠা আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতিলাভের জন্য ‘নিষ্কৃতি কর’ হিসাবে চৌথ ও সরদেশমুখী পরিগণিত হয়। ঐতিহাসিক রাণাডের মতে, অন্য কোনো তৃতীয় শক্তির আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিবেশী রাজ্য থেকে এই কর আদায় করা হত। কিন্তু সরদেশাই লিখেছেন, শত্রু বা বিজিত রাজ্য থেকে ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ আদায় করা হত। কিন্তু স্যার যদুনাথ সরকার এই মতের বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ কর যে অঞ্চল থেকে আদায় করা হত সেই অঞ্চল মারাঠা আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতি পেত। তিনি শিবাজির ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ কর আদায়কে লুণ্ঠন বলে মনে করেন। তাঁর মতে, শিবাজির ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ ...

মার্কেন্টাইল বাদ কি ? এর বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি ?

মার্কেন্টাইলবাদঃ মার্কেন্টাইল বিখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডম স্মিথ তার লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ “ওয়েল্থ্ অব নেশনস” (Wealth of Nations)- এ ‘মার্কেন্টাইলবাদ’ (Mercantilism) কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। মার্কেন্টাইলবাদীদের ধারণায় পৃথিবীতে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। এই মতবাদের মূল কথা হল সংরক্ষণবাদী অর্থনীতি অনুযায়ী বলা হয় এই মতবাদ মেনে বিদেশি পণ্য আমদানি কমানোর জন্য আমদানি শুল্ক বাড়ানো হত। এই মতবাদের মূল লক্ষ্য হল দেশ স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধশালী করে তোলার জন্য নিজ দেশের সোনা রুপোর মতো মূল্যবান ধাতুর সঞ্চয় বাড়ানো। মূল বক্তব্যসমূহ বা বৈশিষ্ট্যসমূহ (1) আর্থিক জাতীয়তাবাদ: ষোলো থেকে আঠারো শতকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি রাষ্ট্রের অধীনে আসে। অর্থাৎ রাষ্ট্র অর্থনীতির মূল নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে। বণিকদের স্বার্থে গড়ে ওঠা গিল্ডগুলির বদলে রাষ্ট্র বণিক ও বাণিজ্য বিষয়গুলির দেখাশোনা শুরু করে। রাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে বণিক ও উৎপাদকের স্বার্থকে এক দৃষ্টিতে দেখা শুরু হয়। ফলে জাতীয়তাবাদী স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে অর্থনীতি পরিচালিত হতে শুধু করে, যার নাম হয় অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ। (2) মূল্যবান ধাতুর ওপর গ...

উপনিবেশবাদ বলতে কী বোঝো ? উপনিবেশ স্থাপনের কারণগুলি কী কী ?

উপনিবেশবাদঃ শব্দের উৎস এবং অর্থ: উপনিবেশবাদ শব্দটি ইংরেজি 'Colonialism' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ। আবার উপনিবেশবাদ বা 'Colonialism' কথাটি এসেছে লাতিন শব্দ 'Colonia' থেকে যার অর্থ হল বিশাল সম্পত্তি বা এস্টেট (estate)।  সাধারণভাবে বলা যায় কোনো দেশ যদি অন্য দেশের ভূখণ্ড বা অঞ্চলকে নিজের অধীনস্থ করে নেয় তাহলে সেই অঞ্চলটির নাম হয় উপনিবেশ। 'Encyclopaedia of Social Sciences' গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে উপনিবেশবাদ হল অন্য দেশের ভৌগোলিক অঞ্চলের ওপর শাসন প্রতিষ্ঠা ও সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ। উপনিবেশ স্থাপনের কারণসমূহঃ (১) বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা : গুরুত্বপূর্ণ উপনিবেশগুলিকে নিজের অধীনে এনে বৃহৎ শক্তি হিসেবে মর্যাদা লাভের আকাঙ্ক্ষারইউরোপীয় দেশগুলি পারস্পরিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এই প্রতিযোগিতায় ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের বৃহৎ রাষ্ট্রশক্তি হয়ে ওঠার আড়ালে তাদের সুবিশাল ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের বিশেষ ভূমিকা ছিল। এশিয়ার মধ্যে ভারতের অফুরন্ত সম্পদের লোভে প্রলুব্ধ হয়ে ব্রিটিশরা এখানে উপনিবেশ গড়ে তোলে। এভাবেই বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশগুলি উপনিবেশ গঠনের মধ্যে দিয়ে বৃহৎ শ...

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব আলোচনা করো।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পটভূমিঃ   সূচনা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কর্তৃক প্রবর্তিত রাওলাট আইনের চরম পরিণতি ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ উদ্যানে এই কুখ্যাত আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহূত হয়, যেখানে জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে ব্রিটিশের ঘাতক পুলিশবাহিনী গুলি চালিয়ে শান্তিপূর্ণ জমায়েতকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করে। এই কুখ্যাত ঘটনাটি ইতিহাসে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক টমসন ও গ্যারাটের মতে—জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনা সিপাহি বিদ্রোহের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী। এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পটভূমি নীচে উল্লেখ করা হল— [1] পাঞ্জাবে নির্যাতন: জুলুম চালিয়ে যুদ্ধের জন্য পাঞ্জাব থেকে সেনা ও অর্থ সংগ্রহ, ‘গদর' বিদ্রোহ প্রতিরোধ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে সরকার পাঞ্জাবে তীব্র দমনপীড়ন চালালে পাঞ্জাব ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পাঞ্জাবের কর্মচ্যুত সেনাদের সমাবেশে এই ক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় পাঞ্জাবের গভর্নর মাইকেল ও ডায়ারের অত্যাচারী শাসন পাঞ্জাবকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করে। [2] রাওলাট আইন: ভারতীয়দের স্বাধীন...

স্বাধীন ভারতের প্রথম তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও গুরুত্ব লেখো।

স্বাধীন ভারতের প্রথম তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য ও গুরুত্বঃ সূচনা:  ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু (কার্যকাল: ১৯৪৭-৬৪ খ্রি.)-এর উদ্যোগে ভারতে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হল সুসংহত ও সুপরিকল্পিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বিশেষ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারতেও বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং তা বর্তমানকালেও চালু আছে। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৫১-৫৬ খ্রি.): লক্ষ্য : [i] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও দেশভাগের প্রভাবে ভারতের ভেঙে পড়া অর্থনীতি মজবুত করে তোলা। [ii] দেশের মুদ্রাস্ফীতি দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। [iii] উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধি করা। [iv] রাস্তাঘাট তৈরি, সেচের প্রসার, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রভৃতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতি দ্রুততর করা। [v] খাদ্য ও কাঁচামালের সংকট দূর করা। [vi] ভারতীয়দের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটানো। গুরুত্ব : কিছু ত্রুটি সত্ত্বেও প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিভিন্ন গুরুত্ব ছিল। [1] এই পরিকল্পনার ফলে ভা...

কার্লসবার্ড ডিক্রি কি ?

কার্লসবার্ড ডিক্রিঃ      অস্ট্রিয়ার রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী মেটারনিকের জার্মানী সম্পর্কে অত্যন্ত কঠোর নীতির মূল কথা ছিল জার্মানীর প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, জার্মানীকে দুর্বল ও খণ্ডিত রেখে জার্মানীর ঐক্যবন্ধনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা। ইউরোপে মুক্তি সংগ্রামের সময় জার্মানদের জাতীয়তাবাদী মনোভাব যেরূপ উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছিল, ভিয়েনা বন্দোবস্ত তা চরিতার্থ করতে পারেনি। সুতরাং তাদের জাতীয়তাবাদী আশা-আকাঙক্ষা অপরিতৃপ্ত হয়ে যায়। জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল অসন্তোষের মূলকেন্দ্র। অধ্যাপকদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রগণ বার্চেনস্যাফট (Burchenchaft) গড়ে জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আদর্শ প্রচার করে যেতে শুরু করে। লিপজিগ-এর যুদ্ধের স্মৃতি উদ্যাপন করার জন্য ছাত্রগণ ওয়ার্টবার্গ (Wartburg) উৎসবের আয়োজন করে ও মেটারনিকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়ার গুপ্তচর সন্দেহে কট্‌জেবু (Kotzebu) নামে এক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। মেটারনিক এইসব ঘটনাকে বিপ্লবী কার্যকলাপ মনে করে প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডারিক ও জার্মানীর অন্যান্য রাজন্যবর্গকে সতর্ক করে দেন। মেটারনিক রাশিয়ার...

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব ঃ ভূমিকা: ভারতের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বশেষ বৃহৎ মরিয়া গণ প্রচেষ্টা হল ভারত ছাড়ো আন্দোলন। গান্ধিজি ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্যে 'হরিজন' পত্রিকায় লেখেন (১৯৪২ খ্রি., ২৪ মে) – ভারতকে ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দাও, না হলে তাকে নৈরাজ্যের হাতে ছেড়ে চলে যাও (Leave India to God. If that is too much, then leave her. to anarchy')। পটভূমি / কারণ   [1] ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতা : ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ভারতবাসী অনুভব করে যে—ইংরেজ সরকার কখনোই স্বেচ্ছায় তাদেরকে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেবে না। তাই স্বাধীনতা পেতে হলে সরাসরি ইংরেজদের সঙ্গে সংগ্রামে লিপ্ত হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। [2] ব্রিটিশ দমননীতি : ব্রিটিশ সরকার তার সামরিক বাহিনী দ্বারা ভারতবাসীর ওপর যে অকথ্য নির্যাতন, অত্যাচার চালিয়ে আসছিল তাতে ভারতীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে মুক্তির পথ খুঁজতে শুরু করেছিল। ব্রিটিশরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয়দের কালা আদমি বলে উপেক্ষা করে আসার পাশাপাশি ভারতীয় নারীদের প্রতি অশালীন আচরণ শুরু করলে ভারতীয়দের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। [3] দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি : দ্বিত...